আলোচিত সংবাদ

গিবত শোনাও গুনাহ্!

 অনলাইন ডেস্ক আজকের তালা ২ মার্চ ২০২৫ , ১:৪৪:৪১

পবিত্র ইসলাম ধর্মে গিবত চর্চাকে গর্হিত কাজ বলে আখ্যা দেওয়া হয়েছে। কারো পেছনে তার নামে সমালোচনা কিংবা দোষচর্চা করাই গিবত। কোরআনে আল্লাহ তাআলা অন্যের সম্পর্কে গিবত করা থেকে বিরত থাকতে বলেছেন। গিবত করাকে মৃত ভাইয়ের গোশত ভক্ষণ করার মতো গর্হিত কাজের সঙ্গে তুলনা করা হয়েছে। আল্লাহ তাআলা পবিত্র কোরআনে উল্লেখ করেন_

“হে মুমিনগণ, তোমরা অধিক অনুমান থেকে দূরে থাক। নিশ্চয় কোন কোন অনুমান গুনাহের কাজ। আর তোমরা অন্যের দোষ খোঁজাখুঁজি করো না এবং একে অপরের গিবত করো না। তোমাদের মধ্যে কি কেউ তার মৃত ভাইয়ের গোশত খেতে পছন্দ করবে? তোমরা তো তা অপছন্দই করে থাক। তোমরা আল্লাহকে ভয় কর। নিশ্চয়ই আল্লাহ তওবা কবুলকারী, অসীম দয়ালু।“ (সুরা হুজুরাত: ১২)

ইসলামে গিবত বা পরনিন্দা সম্পূর্ণরূপে হারাম ও নিষিদ্ধ। গিবত করা ও গিবত শোনা সমান অপরাধ। মদ্যপান, চুরি, ডাকাতি, ব্যভিচার ইত্যাদির চেয়েও মারাত্মক ও নিকৃষ্টতম পাপ ও কবিরা গুনাহ গিবত। গিবতকারীকে নিষেধ করা এবং প্রয়োজনে সেই স্থান ত্যাগ করা ওয়াজিব বলে ইসলামে নির্দেশ রয়েছে।

আবু হোরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, একদিন আল্লাহর রাসুল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, “আপনারা কি জানেন, গিবত কাকে বলে? সাহাবিরা বললেন, আল্লাহ ও তার রাসুল ভালো জানেন। রাসুল (সা.) বললেন, আপনার ভাই যা অপছন্দ করে, তা তার অনুপস্থিতিতে আলোচনা করাই গিবত।“

“এক সাহাবি বললেন, যদি আমি এমন কোনো দোষের কথা বলি, যা তার মধ্যে আছে, তাহলেও কি গিবত হবে? রাসুল (সা.) বললেন, আপনি যে দোষের কথা বললেন, তা যদি তার মধ্যে থাকে, তাহলেই তো তা গিবত হলো। আপনি যদি এমন কিছু বলেন যা তার মধ্যে নেই, তাহলে তো আপনি তাকে অপবাদ দিলেন!” (সহিহ মুসলিম)

মহানবী হজরত মুহাম্মাদ (সা.) বলেছেন, ‘পরচর্চাকারী জান্নাতে প্রবেশ করতে পারবে না।’ (বুখারি ও মুসলিম)।

রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘যখন আমাকে মিরাজে নিয়ে যাওয়া হলো, তখন আমাকে তামার নখওয়ালা একদল লোকের পাশ দিয়ে নিয়ে যাওয়া হলো। তারা তাদের নখগুলো দিয়ে মুখমণ্ডলে আর বুকে আঘাত করে ক্ষতবিক্ষত করছিল। আমি জিজ্ঞেস করলাম, হে জিবরাইল! এরা কারা? জিবরাইল (আ.) বললেন, এরা দুনিয়াতে মানুষের গোশত ভক্ষণ করত এবং তাদের মানসম্মান নষ্ট করত। অর্থাৎ তারা মানুষের গিবত ও কুৎসা করত।’ (আবু দাউদ)।

বিখ্যাত তাবেঈ সাইদ ইবনে জুবাইর (রহ.) সম্পর্কে এই বিষয়ে বর্ণিত রয়েছে। তিনি কোনো গিবতকারীর সঙ্গে বসতেন না। মুসা ইবনে ইবরাহিম বলেন, “একদিন আমি মারুফ কারখির (রহ.) মজলিসে বসে ছিলাম। সেখানে এক ব্যক্তি আরেকজন সম্পর্কে কথা বলতে বলতে গিবত করা শুরু করলো। মারুফ কারখি (রহ.) তাকে মৃত্যুর কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে বললেন, ওই সময়ের কথা স্মরণ করো, যখন তোমার চোখে তুলা দেওয়া হবে।“ (হিলয়াতুল আওলিয়া)

আরও খবর 48

Sponsered content